শ্রেণিবিভাগ
সদানন্দ সিংহ
ছোটবেলায় অনেক কথাই আমাকে শেখানো হয়েছিল। এর মধ্যে একটা হল – “সদা সত্য কথা বলিবে”। আরেকটা হল – “অপ্রিয় সত্য কথা বলিবে না”। দেখুন তো, কী সব গণ্ডগোলের ব্যাপার-স্যাপার। একবার বলে “সত্য কথা বলিবে”, আরেকবার বলে “বলিতে নেই”! তাই সারাজীবন ধরে ভেবে নিতে হচ্ছে কোন্টা অপ্রিয় সত্য আর কোন্টা না। আবার যেটা একজনের আছে অপ্রিয় সেটাই আবার আরেকজনের কাছে প্রিয়। তাই আজ একটা অপ্রিয় সত্য কথা থুক্কো প্রিয় সত্য কথা বলেই ফেলি। মনে করুন না এটা একটা ব্যবহারিক প্রয়োগভিত্তিক একটা বীক্ষণ।
অনেক কবি-লেখক-শিল্পি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের নাকি একটা তৃতীয় চক্ষু আছে। তাঁদের দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি নাকি লেখার মাধ্যমে বা অন্য কিছুর মাধ্যমে সৃজনশীল হয়ে ওঠে। তা আমি এক হালা, খালি কেবল উল্টোপাল্টা কথা কইয়া যাই। খালি কেবল দুই চোখের চশমার কাচ মুছতে মুছতে দেখার চেষ্টা করে যাই। তাই বন্ধুগণ, রাগ করিবেন না। কথাটা হচ্ছে, আমাদের বেশির ভাগ কবি-লেখক-শিল্পি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের মোটামুটিভাবে নিম্নলিখিত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
[এক] এঁরা বামপন্থী এবং তৈল্যমর্দনে বিশ্বাসী। ফলে কোনো একসময়ে এঁরা সহজেই কল্কে পেয়ে যান।
[দুই] এঁরা ডানপন্থী এবং তৈল্যমর্দনে বিশ্বাসী। তাই কোনো একসময়ে এঁরাও সহজেই কল্কে পেয়ে যান।
[তিন] এঁরা ডানপন্থী বা বামপন্থী কোনোটাই নন এবং তৈল্যমর্দনে অবিশ্বাসী। নিজের ক্ষমতায় এঁরা কল্কে তৈরি করে নেন।
[চার] এঁরা বামপন্থী অথবা ডানপন্থী, কিন্তু তৈল্যমর্দনে অবিশ্বাসী। ফলে কোনোসময়েই এঁরা সহজে কল্কে পাননা, আর কল্কে না পেলেও এঁদের কিছু যায় আসে না।
[পাঁচ] এছাড়াও নিপাতনে সিদ্ধ কিছু লোক আছেন, যাঁরা নিজের সুবিধানুযায়ী উপরোক্ত যে-কোনো ভাগে অনবরত চলাফেরা করেন; উদ্দেশ্য নিজের আখের গোছানো।
পুনশ্চঃ- আর উপরোক্ত বিভাগের বাইরে আরো কিছু কবি-লেখক-শিল্পি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী আছেন (যদি থাকেন), তাঁদের প্রতি রইল আমার সাষ্টাঙ্গে প্রণাম।