(মুক্তগদ্য)
অন্ধকার
শুভেশ চৌধুরী
এক
শূন্যতা বা অসীম আমার বন্ধু
যদিও তাদের সম্বন্ধে আমার সকল প্রকার ধারণাটি হলো অন্ধকার
এই অন্ধকার থেকে আলোতে আসাই আমার বেঁচে থাকার পরীক্ষা ও জীবন
অন্ধকারটি সাহস জোগায়, আমি সাহসী হয়ে পড়ি
রং জোগান দেয়, আমি শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হই
কথার যোগান দেয়, আমি কবি হয়ে পড়ি
অন্ধকার একটি এমন হাঁস যা সোনার ডিম প্রসব করে
এই কালো শ্লেটটি পাই বাবা মা শিক্ষক শিক্ষিকা তাহাদের কাছ থেকে
অঙ্কুরিত মূহূর্তের মধ্যের সময়টিতে
আর পায় কে
আঁকশি কখন যে কাহাকে অবলম্বন করেও জীবন ও তার মানে খুঁজে নেয়
জীবন কেউ দুর্ঘটনার ফলে লাভ করে না, আশীর্বাদ লাভের জন্যই জীবন সম্ভব হয়
অন্ধকার এই শিক্ষাটি দেন
লা মিজারেবল কখন যে বাঁচাটিকে সদর্থক হিসেবে নিয়ে নেয়, দুনিয়ার দুর্ভাগারা সম্যক অবগত হয়েও বাঁচার দিকেই দ্বিগুণ পাঁচগুণ ভাবে ঝাঁপাইয়া পড়েন
জীবন শুধু মধুমাস না তার অতিরিক্ত প্রবল এক ঋতু যা সকল ভিত কাঁপিয়ে দিতে চায় তখন অন্ধকারই প্রতিহত করে ঐ সকল বিরুদ্ধ গতি
কে না জানেন কালো গর্তের কথা
কে না জানেন মাতৃ গর্ভের কথা
কে না জানেন রাতের কথা
রাত পোহালে
গর্ভ মুক্তির পর
একটি দিন হইবে নক্ষত্র বিস্ফারের
অনন্ত নক্ষত্র বিস্ফারের
দুই
তারা কয়জন
যারা পলায়ন করে না
অন্ধকার দেখিলেও পলায়ন করে না
একা না পারিলে একসাথে জোট বেঁধে দাড়িয়ে যায় লড়াই করে
অন্ধকার দেখিলেও ভয় করিও না
তিষ্ঠ তিষ্ঠ
জয় পাইবে
তিন
অন্ধকার
একটি ছবি
বিমূর্ত
রংকে অর্থ দেয়
ভাবনা সহস্র পুস্পে প্রস্ফুটিত হয়
চার
হুবহু যে চিত্রটি আঁকা হইলো তা জীবন্ত এতোই জীবন্ত, সৃষ্টি মানুষের না ঈশ্বরের সংশয় প্রকাশ করি না কেননা পটের আবহ
সব সময়ই চিন্ময় রূপ পরিগ্রহ করে
প্রাণের স্পন্দন শোনা যায় শিল্পীর,
বর্তমানের মানব রূপ পরিগ্রহ করার আগেও অন্ধকার গুহামানুষদের আঁকা চিত্রগুলো এই কথাটাই বলে গেলেন