নিশানগাঁথা
বেরুবার আগে আটঘাট বেঁধে নিতে হয়
জবাবি খাম ডাকবাক্সে দেবার আগে
ঠিকানায় আর একবার চোখ বুলিয়েও
নিশ্চিন্ত হতে পারা যায় না ৷ সন্দেহবাতিক ৷
ছাল ছাড়িয়ে নুন মাখানোর দিব্যি যেমন
অনায়াসে দেয় নিত্যদিনের বুভুক্ষু হকার
বাস্তবটা ততো সহজতর নয় সে সম্যক জানে
তবুও ভাষার আড়ালে এক বিরল উল্লাস
বিপ্লবমন্তরে আবিষ্ট হওয়ার দীক্ষা সারা হয়
বাকি সময় ক্ষুধার কাছে পোষ মানে দ্রোহপাঠ
প্রতিটি তিথি এলে ঘটা করে পতাকা তোলেন কর্তা
আর সন্ধ্যার আড়ালে সে পতাকা নামায় বেনামি আর্দালি৷
এইসব বালিকারা
এইসব বালিকারা আছে বলেই অভিমান দীর্ঘস্থায়ী হয় না
এইসব বালিকার চোখের পলকে ব্যথানাশকের সম্মোহন
এইসব সর্বংসহারা অগ্নিকুঠুরিতে পরীক্ষা দিতে দিতে
কবিতার সঙ্গে প্রকাশ্য প্রণয়ের শুদ্ধ সাহস রাখে
এইসব বালিকারা একা হেঁটে যায় যোজন যোজন পথ
আলো হাতে কেউ বা না আসুক, অন্ধকারে নিজেই বাতিব্রতী
এইসব বালিকার পাশে দাঁড়ালে প্রত্যহ প্রত্যয় হয়
হাত যদি তারা বাড়িয়ে দেয় কারো দিকে,
কোমল হলেও সে মুঠো দৃঢ় অনন্ত আশ্বাসের প্রতীক
আসুন, লালন করি এইসব বালিকাদের, মনে ও মননে ৷
শ্রম
আট ঘন্টার বস্তুবাদী লড়াইয়ের ময়দানে উর্বরতা নেই ৷
ফুল ও স্বপ্ন ফোটার চেয়ে তাওয়ায় ভেসে ওঠা রুটির পোড়া পিঠের ওপর
চোখ যায় বরং
শব্দশ্রমিক অষ্টপ্রহর কলমে কাগজে আকাশ দেখে, আকাশগঙ্গা দেখে
রামধনু আঁকবার জন্যে পেয়ালা ছুঁড়ে মারে শূন্যে
গেরস্তগোলা থেকে সব শস্য পেড়ে এনে
আলপনা দেয় আশ্রমের উঠোনে
আশ্রমবালিকার ঝরনাকথনে বোধিধ্যান ভেঙে
কবিও কলমুখর ব্রহ্মপুত্র দৌড়বিদ
মানস সরোবরের অর্গল খুলে আছড়ে পড়ে স্বচ্ছ শব্দস্ফটিক
নুড়ি কুড়িয়ে নিয়ে শুধু স্মৃতির ঝাঁপি ভরে ওঠে হরেক রঙে
স্বেচ্ছাশ্রম নিপুণ হয়ে উঠলে উঠোন ভরে যায় অলৌকিক রঙ্গোলিতে
কবিতা তখন তপোবন ও আশ্রমপ্রত
HOME
[এই লেখাটা শেয়ার করুন]