অরণ্যে একাকী ললিতা
তারস্বরে তারে ডাকে ‘এসেছো ললিতা ?’
ললিতা হাসে না ।
বাজখাঁই গলা সব,
সমাদরে সাজঘরে নিয়ে যায় তারে
ললিতা কাঁদিয়া বলে ‘ লাশঘরে কেন ?’
বড় অবুঝ হলুদ পাখি
মুখ থুবড়ে কেশে কেশে
পাহাড়ের সানুদেশে মরে গেছে ।
হাটের মাঝে প্রেম মৃগটা
খুঁজছে সবুজ মাঠ,
প্রতারক আকাশ তবু
ঝাঁপিটা খোলেনা ।
ললিতা তুমি পথ হারাইয়াছ !
কাঁটাঝোপে রক্তাক্ত ললিতা
একাকী অরণ্যে ।
রামচন্দ্র লোধ বলে ‘বাই জোভ
তোরে পুরেছি খাঁচায়’
বরফ জমাট বাঁধে হৃদয়ের পলিপ্যাকে
ভ্লাদিমির নবকোভ গান গায়
রহিম মিঞার ঘরে ।
একটি কবিতার জন্যে
একটি কবিতা লিখব বলে
ভেবে ভেবে কাটালাম সারাটি দিন
সম্ভাব্য স্থানগুলি মনে মনে ঘুরে বেড়ালাম
এক এক করে
যেমন চাঁদ, নদী, টপলেস ব্লাউজের খাঁচা
এবং উলটানো কড়াই এক – প্রতারক আকাশ,
সব সবই ।
অথচ ভাবতে ভাবতে পরিশ্রম
অতএব বিশ্রামহেতু শয়ন, এবং
অবশেষে নিদ্রা
ইত্যাদি নিত্যবর্তমান বিষয়ক কর্মের সূচী বহির্ভূত
একটা অতিরিক্ত কাজও হল না ।
বিকেল চারটা ত্রিশ মিনিটে
একটা অপসৃয়মান স্বপকে আঁকড়ে ধরার
বৃথা চেষ্টা করতে করতে জেগে উঠলাম
এবং মগজের দেনার হিসেবগুলোর
অসহ্য দংশনে তখনই মনে পড়ল
টিউশানিতে যেতে হবে ।
বৈরী
ছাতাটা না নিয়ে বের হলেই
তেড়ে বৃষ্টি এসে মুছে দ্যায়
আমার সব প্রসাধন ।
এবং তখন আমার
নষ্ট হয়ে যাওয়া পাটভাঙা স্যুট,
রঙীন স্যান্ডেল ইত্যাদির মমতা বোধে
ছাতা না আনার জন্য
নিজের উপর ভয়ানক বিরক্ত হই;
অথচ অর্নথক ছাতাটা বয়ে বয়ে
প্রেম অপ্রেম
তোমাকে না পাওয়া পর্যন্ত
ব্যস্ত হয়ে খুঁজে বেড়াই এপথ ওপথ
নদীর ঘাট থেকে খিড়কি
বাস স্টপেজ থেকে আরও পূর্বে
ঊনকোটির ভাস্কর্য অবধি;
অথচ তোমাকে পেলে পর
নিতান্ত পরিচিত রুমালের মত
মুখ মুছে পকেটে রেখে
আমার কবিতার কথা মনে আসে;
মনে আসে অন্যান্য সব কর্তব্যের সূচী
সীমাবদ্ধ
গানের কাছে শিখতে গেলাম মানে
গান জানাল – মুচকি হেসে
কিছু নাহি জানে ।
জলের কাছে চাইতে গেলাম বল
বানভাসি জল ভেঙে নিল ঘর;
ফেরত দিল অট্টহাসি
কুলুকুলু কল্কল্ কল্কল্ ।
আলোর কাছে আনতে গেলাম গতি
আলো জানায় মাটির প্রদীপ
ঘরের কোণেই থাক;
রবির জীবন মহাশূন্যে
কষ্টসাধ্য অতি ।
নেতার কাছে জানতে গেলাম
কী ছিল মোর দোষ
HOME
[এই লেখাটা শেয়ার করুন]