ধারাপতনের কোলাহল
লঙ্গরখানায় এক ডেক্চি ভাত-অসামান্যতার দিকে ঝুঁকে পড়েছে একলক্ষ চোখ,
দশ বছর কি আরো পরে, এর থেকেই সিঁদকাটা এক চোরের ছেলে হয়েছে অধ্যাপক,
আমি তার ছেলেমেয়ের শিক্ষক, আমার বাপ ছিল মাঝিমাল্লা দেশের ডাকহরকরা,
তেপান্তরের রঙিন কিশোর সব হারিয়ে আজ পেয়েছে সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ফ্যান খাইয়ে মা পাঠিয়েছিলো পাঠশালায়
তারপর ‘ঠাণ্ডা মাথায় রেগে’ যেতে যেতে একসময় ধানকলে আমি
ধান ছড়িয়ে চাল হলাম
ডেক্চিতে ফুটে আমি হতবাক, এক অসভ্য দেশহিতৈষীর স্টুলের দিকে এগিয়ে যাই,
( ভণ্ডদের পাকস্থলীতেও আগে থেকে লাইন পড়ে গেছে এলকোহল, ভাত আমি
স্বপাকে গু হলাম, যাকে নির্বাণলাভ বলা যেতে পারে ),
লঙ্গরখানা ভুলতে পারি না
পয়ঃপ্রণালীর প্রান্ত ছুঁয়ে পড়ে আছে এক বুদ্ধিদীপ্ত হাত, আমার
ঠাকুর্দা ছিলো দেশবাড়ির চাষা, বলতো “ভাত ছড়াইয়্যা ছিড়াইয়্যা
খাইচ্ না রে লক্খি পলাইবো’
একটা পিঁপড়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে চোখের মণি, ভাত
দাঁড়িয়ে দেখলাম, সাঁজোয়া বাহিনীর সঙ্গে এক শাদা ট্যাঙ্ক
কুরুক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে,
ওই দিকেই সব থেকে বেশি নেইনেই কোলাহল
মেরুদণ্ড বেয়ে বারিধারা সোহাগে বয়ে যায় পায়ুর দিকে, অনুভূতিরেখা
মুখ ঘুরিয়ে নেমে যাচ্ছে গোড়ালি বরাবর,
পায়ের পাতা ভিজলো
পৃথিবী ভিজলো
আমার একটি লোমও কাঁপলো না
আজ সারা শীতের দুপুর এক অযাচিত তাজা সৈনিকের লাশ পড়ে
আছে, ধৃত বন্দুকটি আকাশের দিকে মুখ রেখে নির্লজ্জ সূর্যকে শাসায়
আমি সেই পুরনো ভাতটিকে লোক্ষ করি,
ট্রিগার বেয়ে সে বন্দুকের নলগর্ভে ডুবে যাচ্ছে দুর্দান্ত,
ওহো, ফেন্টাস্টিক
ভাস্কর্যের নিচে মৃত কাক
একজন সৈনিক হাত ওপরে আঙুল উঁচিয়ে দেখাচ্ছে ‘দিল্লি চলো’
আর পোড়া পাতিলের সন্ধে, পার্কে এসে বসলো জুড়ে প্রত্যুৎপন্নমতি
শতাব্দীর আলো অদূরে সাইনবোর্ড থেকে ঝুলে পথে নেমে এসেছে
আর ভাজা বাদামের মুখ ফেটে বেরিয়ে যাচ্ছিলো টাটকা কিশোরী
পাত্রটি ছিলো দ্য ভিঞ্চির হাতের ওপর, তরল রশ্মি আর স্বর্ণতুলি
গান আসছিল রাধামাধব আশ্রম থেকে, বাতায়নে নক্ষত্র আলোয়ান
আরও একটি পয়সার জন্যে হত্যাকারী নেংটো বালক হাঁটছিলো
আর শুনছিলো কোথায় যেন লুট হয়েছে মৃত শেফালির কেশবাক্স
কান পাতলো আর হাত পাতলো কান নাড়ালো হাত ঘোরালো
পা চালালো পেট নাচালো মাথা ঝাঁকালো চোখ ডুবালো জলে
তারপর সে পেচ্ছাব চেয়েছিলো, দু পা ফাঁক করে মূত্রবিন্যাসের আগে
ভেবে দেখলো জায়গাটা ঠিক মানানসই নয়, ভাস্কর্যের নিচে মৃতকাক
HOME
[এই লেখাটা শেয়ার করুন]