নাইটআউট – বৈদূর্য্য সরকার

নাইটআউট            (ছোটোগল্প)

বৈদূর্য্য সরকার

– ঠাকুর বলছি…
দীর্ঘদিন বাদে ছেলেবেলার কোনও বন্ধুর ফোন পেলে সবাই একটু অবাক হলেও খুশি হয়।
– কতদিন বাদে তোর সাথে কথা হচ্ছে ভাই… সৌম্য বলল।
তখন সন্ধের ঝোঁক, কাজকর্ম তেমন নেই। নিজের চেম্বারে বসে আগামীকালের হিয়ারিংগুলোর কাগজপত্র দেখছিল সৌম্য। ওকালতি করছে ছ’বছর।
– কীরে বাবাই…এতদিন কোথায় ছিলি? ফেসবুকেও দেখি না তোকে… হোঁৎকার গলায় আবাক হওয়ার ভঙ্গি। ও একটা শপিং মলে কাজ করে।
– হ্যালো হ্যালো… লাইনটা কেটে যাচ্ছে… মিলন মেট্রোয় ফিরছিল কাজ থেকে। 
মিলনের বাইক বিগড়েছে। নয়তো মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের ওটাই মূল ভরসা।
সায়ন্তন তার স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে উত্তর দিল, আমি গব্বর বলছি বে…। ও বোধহয় ঠাকুরের সাথে কলেজবেলার রেষারেষিটা ভুলতে পারেনি।ও সরকারি অফিসে কাজ করে, ভাল ছাত্র ছিল। কথাবার্তায় সবাইকে হেয় করে থাকে।
তার দীর্ঘ অদর্শনের কারণ হিসেবে ঠাকুর মানে কৌশিক সবাইকেই বলেছিল – ব্যবসার নানা ধান্দায় ঘুরে বেড়াতে হয়… তোদের মতো গুড বয় তো ছিলাম না… কতদিন দেখা হয়নি, মনে পড়ে তোদের কথা… তাই ওরা জানতো না ওর ব্যবসার ব্যাপারটা। তবু একটা ছেলে যে এভাবে উবে যাবে, কেউ মানতে পারেনি।
শাম্ব ফোন পেয়ে বলল, অনেকদিন পর… কোথায় আছিস এখন?
সৌম্য ছোটবেলার স্মৃতি রোমন্থন করে বলেছিল, তোর কথাও তো খুব মনে পড়ে ভাই…
হোঁৎকা জিজ্ঞেস করলো, কী করছিলিস… এতদিন পর এই ফোন নাম্বার পেলি কোথায়!
সায়ন্তন নিজের চাকরির ব্যস্ততায় বিরক্ত। সে বলল, ভালই তো ফুর্তিতে আছিস… দেখা হয়নি তো আয়, এলেই দেখা হবে।
কৌশিক সবাইকেই বলল, তোদের সাথে দেখা হয় না ভেবেই তো ফোন করলাম… চলে আয় না, এই শনিবার ফ্রি আছি… তোরা বিকেলে চলে আয়… আমাদের বাড়িটা তো ফাঁকাই আছে।
আগে সকলেই ওখানে গেছে। কিন্তু এখন সবাই ব্যস্ত গেরস্থ মানুষ। মিলন অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলো, তুই বিয়ে-থা করিসনি এখনও? শনি রবিবার ওই বাড়িতে ফুর্তি করতে যাস!  
সায়ন্তন মাঝে বিদেশ ঘুরে এসে মধ্যবিত্ত সেন্টিমেন্ট কাটিয়ে ফেলেছিল অনেকটাই। সে বলল, আবার তোর সেই গ্রামের বাড়িতে… মশার কামড় আর ঝিঁঝিঁর ডাক। 
শাম্ব সিরিয়াস মুখে বলল, বিকেলে গেলে তো নাইট স্টে করতে হবে…
কৌশিক রহস্যময় ভঙ্গিতে বলেছিল, না থাকলে খেলা জমবে কি করে! রাতেই তো মস্তি … সূর্য না ডুবলে আমি আবার গলা খুলতে পারি না… দিনের বেলা দেখা করে কী করবো! কেত্তন তো অন্ধকারেই জমে…
আশঙ্কাটা আঁচ করে হোঁৎকা বলেছিল, বেশী নয় কিন্তু… আজকাল বেশি খেতে পারি না… শুকনো হলে আরও চাপ
যেতে যদিও আপত্তি নেই। তবে মিলন বলে রাখলো, পরের দিন সকালে ফিরতে হবে কিন্তু… রোববার অনে্ক কাজ। সৌম্য সেসবে গুরুত্ব না দিয়ে বলল, তোর গান কতদিন শুনিনি রে ভাই… গিটার বাজাবি কিন্তু।

শুক্রবার সন্ধেতে সবাই মেসেজ পেল – কাল আসছিস তো… আমি সব অ্যারেঞ্জ করে রাখছি… কাছাকাছি এসে কল করে নিবি।

সেই সূত্রে শনিবার দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে শাম্বের গাড়ি করে সবাই চলল, অতীত জীবনের স্মৃতি জাগাতে। 
– ওই বালটার কথায় তোরা নেচে উঠলি… ওকে বিশ্বাস নেই… কি যে করে রাখবে কে জানে! মুখে সায়ন্তন একথা বললেও সেও এসেছে শেষপর্যন্ত। সৌম্য কৈফিয়তের সুরে বলল, এমন করে বলল… না এসে পারা যায় নাকি!
হোঁৎকার প্রাণে ততক্ষণে ফূর্তি জেগেছে, সে বলল – তোদের সব ব্যাপারে সন্দেহ… আগেও তো গেছিস…  রাতে মাল খাবি শুকনো টানবি… হাফ শাটার হয়ে পড়ে থাকবি… এতো ঝামেলার কি আছে!
শাম্ব ড্রাইভ করতে করতে বিরক্ত মুখে বলে উঠল, সব হাফ শাটার হয়ে পড়ে থাকবি … আর আমাকে ড্রাইভ করে ফিরতে হবে! কথাটা শুনে মিলন হেসে ফেলল, সে তো তুই ভালবাসিস… নয়তো আমি না হয়।
সায়ন্তন বলে উঠল, তুই সারাজীবন ক্রুসিয়াল টাইমে ওয়াইড করতিস… আর মাল খেয়ে নাকি সোজা ড্রাইভ করবি!
হোঁৎকা হাসতে হাসতে বলে উঠল, আর রোগা যে আসল সময় নো বল করে সুইটিকে…
শুনে সৌম্য খচে গিয়ে উত্তর দিল, মাল না খেয়েই ভাট বকছিস কেন!
ফোনটা হাতে নিয়ে শাম্ব সবাইকে থামিয়ে, দাঁড়া দাঁড়া… ঠাকুরকে একটা কল করে নিই… কাছাকাছি এসে গেছি,
সে নাম্বার সুইচ অফ বলছে। শুনেই সায়ন্তন হতাশ মুখে বলে ফেলল, আমি ঠিক জানি…মালটা ঝোলাবে।
মিলন নিজের ফোনটা দেখতে দেখতে, আরে এই তো গ্রুপে ম্যাসেজ দিয়ে রেখেছে… ‘তোরা চলে আয়… সব রেডি আছে…আমি ঠিক সময়ে এসে যাবো’।

আরও কিছুদূর গিয়ে শাম্ব ঘোষণা করল, এই মাঠের মধ্যে গাড়ি যাবে না…। মিলন পরামর্শ দিল, এখানেই পার্ক করে রাখ… কোনও চাপ নেই এখানে… ফাঁকা জায়গা।
সৌম্য ততক্ষণে একটু এগিয়ে গেছে, ওদের ডেকে বলল – ওই তো বাড়িটা দেখা যাচ্ছে। হোঁৎকা পুলকিত মুখে বলে উঠল, বাড়িটা কিন্তু হেব্বি জায়গায় … আশপাশে কেউ নেই। 
দলবেঁধে ওরা হেঁটে এগোতে লাগলো পায়েচলা মাটির পথ দিয়ে। তখন বিকেলের আলো মরে এসেছে। বাড়িটার সামনে এসে দেখলো, দরজা খোলা। সব খুলে রেখে কৌশিক গেল কোথায়?
ঘরে ঢুকে সবাই একবাক্যে স্বীকার করলো – সব মজুত করে গেছে, দেখেই লোভ লাগছে …এতোটা জার্নি করে এসে গলা শুকিয়ে গেছে মাইরি। সায়ন্তন হোঁৎকাকে বলল, তুই যে বলছিলি বেশি খাবি না… এদিকে বোতল দেখেই খুলতে শুরু করলি! মিলন হাত পা ছড়িয়ে বসে বলল, ছাড় তো … শুধু ঝামেলা করিস… বলে একটা সিগারেট ধরালো।
সৌম্য ভেবেচিন্তে বলল, ও সব ব্যবস্থা করে আশপাশে কোথাও গেছে নিশ্চিত … হালকা করে শুরু কর এবার। রোগার খালি খাই খাই সবসময়! হোঁৎকা ওর কাঁধে হাত রেখে ন্যকামি করলো, বউয়ের সাথে ঝামেলা করে এসেছি ভাই… তাড়াতাড়ি শুরু কর … চুপ করে বসে থাকব নাকি!
শাম্ব পেগ বানাতে লাগলো। মিলন গরমের জন্যেই বোধহয় বলল, পেগটা খেয়ে কিন্তু সবাই জামাপ্যান্ট খুলে নাচব। বেশ কিছুক্ষণ ধরে খাওয়া চলতে থাকলো। এর ওর পেছনে লাগালাগিও। সায়ন্তন মুখভঙ্গি করে দেখাতে লাগলো কীভবে রোগা সব হাড় চুষে খেয়ে নিলো। মিলন আপনমনে ততক্ষণে বলতে শুরু করেছে, জায়গাটা কিন্তু বেশ… কিন্তু গান বাজনা হচ্ছে না কেন … ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। শুনে হোঁৎকা চোখ বুঝে বলে ঊঠল, একটা জয়েন্ট ধরাই … গান শুনতে পাবি
ঠিক তখনই সবাই শুনতে পেল “Jina Yaha Marna Yaha, Iske siva jana Kaha”। যেন ব্যাকগ্রাউণ্ড থেকে গাইতে গাইতে এসে দরজার পাল্লায় ধাক্কা দিয়ে ঠাকুর এন্ট্রি নিল। চোখে ভাঙা সানগ্লাস, গলায় পুরনো গিটার।
সায়ন্তন ওকে দেখে খিল্লি করলো, চশমা ভাঙা রাজকাপুর এসে গেছে। সৌম্য শিথিল গলায় বলে উঠল, ভাই কোথায় ছিলিস এতক্ষণ… তোর গান না হলে জমে নাকি! শাম্ব কৌশিকের দিকে তাকিয়ে গেলাসটা তুলে ধরে বলল, মালটা কিন্তু সুখে আছে। মিলন বেসুর গাইলো, চশমাটার এর’ম দশা করলি কি করে!

কৌশিক বলল, আরে গরীব আদমি… তারপর গান ধরল – ‘আমি যে রিক্সাওলা দিন কি এমনি যাবে’। শুনে মালের ঘোরে সবাই রিক্সা চালানোর ভঙ্গি করে খুব আনন্দ পেল। তার মধ্যেই দুঃখিত ভঙ্গিতে সায়ন্তন কৌশিকের দিকে অঙুল দেখিয়ে বলে বসল রিক্সায় তো সুদেষ্ণাকে তুলে নিলি শালা!
– এখন আর ওসব ভেবে আমার কী হবে… সেতো চলেই গেছে…আমারও এই অবস্থা
– তোর রিক্সাওলার মতো মাথা নিয়ে কি আর সুদেষ্ণাকে ধরে রাখা যায়!
হোঁৎকা শুনে বিরক্ত হচ্ছিল… এতদিন বাদেও সেই এক কথা!
সায়ন্তন রেগে বলল, তোর দিকে তো আর ফিরেও তাকায়নি… তুই বাল বুঝবি কি করে! ওর একটা ফোন এসে গেছে বলে থামতে বাধ্য হল। ফোনটা রেখে সবাইকে বলল, ফোন অফ করে দে শালা! যতরাজ্যের ঝামেলা ছুটির দিনেই আসে। সবাই সম্মত হল। কৌশিক ততক্ষণে ‘Hai Apna Dil To Awara Na Jane Kis Pe Aye Ga’ গান শুরু করে দিয়েছে। তার তালে, সবাই মাথা নাড়াতে থাকে।
– তবে যাই বল ভাই… পুরনো দিনগুলো খুব মিস করি
– আর ম্যাচগুলোর কথা বল…
শুনে সায়ন্তন বেজার মুখে বলে বসল – হচ্ছিল মেয়ের কথা… আর এরা ব্যাট বল শুরু করলো! শুনে সবাই হেসে উঠল।

কৌশিক ততক্ষণে বলতে শুরু করেছিল, আমি তোদের সাথে ম্যাচেই কিন্তু নতুন করে লেগ স্পিনটা শুরু করি। একটু থেমে বলল, আজকাল বাঁ হাতে জোর পাই না। সায়ন্তন নাড়িয়ে দেখালো দেখালো, বাঁ হাতে এতো কাজ করলে আর কি হবে! হোঁৎকা ওর গলা জড়াতে গিইয়ে ফসকে পড়েও বলছিল, চিন্তা করিস না ভাই… তোকে ভাল ডাক্তার দেখাবো।
– এতো বকবক করছিস কেন! তার থেকে গানটাই ভাল ছিল
ঠিক এইসময়েই বাড়ির বাইরে থেকে কারা যেন ডাকাডাকি করতে লাগলো। অন্ধকার মাঠের মধ্যে বাড়ি। কে আসবে এত রাতে! সৌম্যের ভূতের ভয় জগতবিখ্যাত। তাই বোধহয় কৌশিক ইচ্ছে করে বলল, একেই বলে নিশির ডাক। সাড়া দিলেই কপ করে আত্মাটাকে ধরে নেবে। ক্রমে সে ডাক থেমে গেল।
কে জানে কেন “jo wada kiya woh nibhana padega” গানটা ধরলো কৌশিক। দুঃখের গান শুনতে ভাল লাগে না এসময়। কৌশিক ম্লান হেসে বলল, কে জানে আবার এভাবে একসাথে বসা হবে! বাকিরা ওকে আশ্বাস দিল, নিশ্চয় হবে!
দুঃখের পরিবেশটা কাটাতেই বোধহয় শাম্ব আর মিলন নাচতে শুরু করলো… তারপর সবাই যোগ দিল। রীতিমতো ধুপধাপ শব্দ হতে লাগলো। তখন রাত বেশ গভীর।

পরের দিন সকালে মিলন সবাইকে ডেকে বলতে লাগলো, ওঠ ওঠ… দশটা বেজে গেল। হোঁৎকা আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বলল – কি ঘুমটাই না হয়েছে… এই শাম্বটা কি নাক ডাকছিল! শাম্ব আঙুল নেড়ে বলল, আমি নাক ডাকিনি… সায়ন্তন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। সায়ন্তন খিস্তি করলো, বালটা কাঁদবো কেন! স্বপ্ন দেখছিলাম তো…।
তারপর সবার খেয়াল হল ঠাকুর কোথায় গেল! ফোনটাও যথারীতি সুইচ অফ। সবাই ব্যস্ত হয়ে খোঁজাখুঁজি করার সময় খেয়াল করলো ঘরদোর সব পরিষ্কার করে রেখে গেছে। সৌম্য নিশ্চিন্ত ভঙ্গিতে, রেডি হয়ে বেরোই… পরে ওকে বলে দিলেই হবে।
মিলন তাড়া দিল, ভাই এবার চল… লাঞ্চের আগে বাড়ি না ফিরলে কেস হয়ে যাবে। শাম্ব আবার চোখ বুজল, মাথাটা ধরে আছে…আর তুই খাইখাই করছিস।
শাম্ব ড্রাইভ করলেও ভীষণ কাতর হয়ে আছে, মাথাটা ইট হয়ে আছে … এতটা রাস্তা চলাবো কি করে! হোঁৎকা হেসে বলে উঠল, খোয়ারি কাটাতে কি করতে হয় জানিস না! মিলন জিজ্ঞেস করলো, আবার!
শাম্ব বাসস্ট্যাণ্ডের পাশে একটা ঝুপড়ি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছিল হালকা করে বিয়ার চার্জ করলে হয়তো। সবাই নেমে দোকানের আশপাশে বিয়ারের খোঁজ করছে, এমন সময় ভেতর থেকে একটা লোক এগিয়ে আসে। ওদের জিজ্ঞেস করছিল, এদিকে কোথায় এসেছিলেন? শাম্ব বলল, ওই বড়বাড়ি থেকে এলাম… বন্ধুর বাড়ি। ঠাণ্ডা কিছু আছে? লোকটা যেন ওর কথা শুনতে না পেয়েই বলল, রাতে বড়বাড়িতে ছিলেন! ওরা ততক্ষণে সবাই জড়ো হয়ে গেছে। বুঝতে পারছে না লোকটার এত কিসের জিজ্ঞাসা! তাই ওকে কনফার্ম করতেই সৌম্য বলে উঠল, হ্যাঁ ওই বাড়ির ছেলে কৌশিকও তো ছিল আমাদের সাথে। ততক্ষণে লোকটা হাঁ আরেকটু বড় হয়ে গেছে। সে ভয়ের ভঙ্গিতে আশপাশের লোকজনকে চিৎকার করে ডাকল।   
ওরা সবাই হতবাক। সব লোকের কথা থেকে জানা গেল বড়বাড়ির ছেলে কাল সন্ধের দিকে একা এখানে বসেই দু’পাত্তর চড়াচ্ছিল। তারপর বন্ধুরা আসবে বলে, তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যায়। মালের ঝোঁকেই হয়তো খেয়াল করেনি, হাইরোড পেরোতে গিয়ে ট্রাকে চাপা পড়ে। লোকজন তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই শেষ। পুলিশ তারপরে ওদের বাড়ি গিয়ে কারো খোঁজ পায়নি। মাঝরাতে পাড়ার লোকেরা খোঁজ করতে গিয়ে বাড়ির ভেতরে লাফালাফির আওয়াজ শুনে ভয় পেয়ে পালিয়ে এসেছিল। ভোররাতে বডি মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ততক্ষণে ওদের সবার হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে। মাথায় অন্ধকার। সবাই যেন ফিসফিস স্বরে শুনতে পেল, ‘জনি ওয়াকস নো মোর’। আকাশ বাতাসে ‘নো মোর’ কথাটা ইকো হতে থাকে।
ঠাকুরের চেহারাটা এখনও ভীষণ স্পষ্ট। রাতের পার্টির দৃশ্যগুলো হাইস্পিডে চোখের সামনে দিয়ে ফাস্ট ফরোয়ার্ড হতে থাকলো যেন। সবাই হতবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকলো রাস্তার দিকে।