সঞ্জীব দে’র কবিতা

কখনও এমন নিঃস্ব মনে হয়নি

সঞ্জীব দে

কখনো এমন নিঃস্ব মনে হয়নি!

জঙ্গলে গরু চড়াতে গিয়ে
বাঁশি বাজাতে বাজাতে
গরু হারিয়ে কতবার
একা
বাড়ি চলে এসেছি —
তখনও এমন নিঃস্ব মনে হয়নি!

এখন সব আছে অথচ কি যেন
হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে আছি প্রতিদিন।
এক নিগূঢ় নিঃস্বতা
এক নিগূঢ় স্তব্ধতা
এক বেওয়ারিশ শূন্যতা
চিতাবাঘের মতো তেড়ে বেড়াচ্ছে জীবন।

এই কোন স্কিজোফ্রেনিয়া!
পৃথিবীর মানুষগুলো ঢুকে যাচ্ছে খোলসের ভেতর!
পৃথিবীকে কুয়ো বানিয়ে ফেলছে! অজ্ঞতা।

সুন্দর নীলাকাশ, প্রকৃতি, তারা, সমুদ্রের উচ্ছ্বাস, উদয়াস্ত, ঝিঁঝির ডাক, শৈশব, কৈশোর, পরিবার, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়
সব -সব –সব
ঢুকে যাচ্ছে এক একটি খোলসের ভেতর!

কখনও এমন নিঃস্ব মনে হয়নি!

প্রেমিকার বিয়ের নিমন্ত্রণ খেয়ে
দিব্যি ঘুমিয়েছি বাড়ির টংঘরে
অভাবী মরশুমে
সারাদিন না খেয়ে গানে গানে সংগত করেছি

মৃত্যুর তাড়া খেয়ে নিস্তব্ধ খোলা মাঠে
নালার ঝোপের আড়ালে কত রাত কেটে গেছে
জোনাকির আলোয়!

কখনও এমন নিঃস্ব মনে হয়নি….

খোলস থেকে খোলসে ঢুকতে ঢুকতে
মানুষ আর মানুষের ভেতর নেই!
মগজ থেকে শরীর
মানুষ থেকে মানুষ
হৃদয় থেকে হৃদয়ের
এতো দূরত্ব দৃষ্টির সীমানা ছাড়িয়ে
অনন্ত দিগন্তে মিলিয়ে যাচ্ছে!

কাছের স্পষ্টতা ফেলে
কঠোর থেকে কঠোর অস্পষ্টতার দিকে হেলে
যাচ্ছে কত মুকুল!

হৃদয়ে নিঃস্বতা নেমে এলে
দিনের আলোয় চোখে হতাশা আর অন্ধকার ছাড়া
দৃশ্যে কিছুই অবশিষ্ট থাকা অসম্ভব!