হাঁপানি বা অ্যাজমা – স্বাতী ধর

হাঁপানি বা অ্যাজমা

স্বাতী ধর, সংগ্রাহকঃ ফীড মিডিয়া

অ্যাজমা। অসুখটির সঙ্গে আমরা এখন বেশ পরিচিত। বিশেষত যখন ঋতু পরিবর্তন হয়, সেই সময় অ্যাজ়মা প্রকোপ বাড়ায়। অনেকেরই ছোট বেলা থেকেই মাথাচাড়া দেয় এই অসুখ, কারও ক্ষেত্রে আবার বিষয়টি জিনগত। অ্যাজ়মা মূলত একটি শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টিকারী অসুখ।

অ্যাজ়মাকে চলিত কথায় বলা হয় হাঁপানি । অনেক সময় এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়, যখন শ্বাসনালী সরু হয়ে যায়, শ্বাসনালীর দেওয়াল ফুলে যায় এবং অতিরিক্ত শ্লেষ্মা জমা হয়। এই অবস্থায় শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কাশির উদ্রেক করতে পারে। যখন কেউ শ্বাস ছাড়ে তখন বাঁশির মতো শব্দ ঘনঘন হতে থাকে। শ্বাস গ্রহণ করাও দুরুহ হয়ে পড়ে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক রুদ্রজিৎ পাল।

হাঁপানি কেন হয়

১) বংশগত কারণ
২) পরিবেশের কারণে হাঁপানি ক্রমশ বাড়ছে
৩) ঘরের জমে থাকা ধুলো নাকে ঢুকলে হাঁপানির আশঙ্কা
৪) বিছানা, কার্পেট, পুরনো আসবাবে থাকা ধুলো নাকে গেলে
৫) দূষণ, ধোঁয়া হাঁপানি অন্যতম কারণ
৬) সিগারেটের ধোঁয়া ও রাসায়নিক উত্তেজক পদার্থ থেকেও হাঁপানি বাড়ে।

হাঁপানি ছোঁয়াচে রোগ নয়

কারও কারও সামান্য কষ্ট দিয়ে হাঁপানি চলে যায়, কাউকে আবার বড় সমস্যায় ফেলে এই রোগ। হাঁপানি সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় না, তবে এর লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তাই প্রথমেই জানা দরকার কেন অ্যাজমা হচ্ছে ? সেই অনুসারে প্রিকশন নেওয়াও জরুরি।

ডা. রুদ্রজিৎ পাল জানাচ্ছেন, হাঁপানির উপসর্গ ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়। কারও মাঝে মাঝেই হাঁপানি হতে পারে। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ে উপসর্গ থাকতে পারে অথবা সব সময় উপসর্গ থাকতে পারে।

হাঁপানির লক্ষণগুলি হলঃ

১) শ্বাস নিতে না পারা
২) বুকে চাপ বা ব্যথা
৩) শ্বাস ছাড়ার সময় সাঁইসাঁই আওয়াজ হওয়া
৪) শ্বাসকষ্ট, কাশি
৫) শ্বাসকষ্টের কারণে ঘুমের সমস্যা
৬) সর্দি, জ্বর

হাঁপানির লক্ষণ এবং উপসর্গ যা বেশি ঘন ঘন দেখা গেলে সাবধান হতে হবে অবশ্যই। কারণ হাঁপানি প্রভাব বিস্তার করে ফুসফুসে। এরপর এমন কোনও রোগ যদি হয়, যা ফুসফুসের ক্ষতি করে, তা হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে। হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়ে বড় বিপদে পড়েছেন। ফুসফুস কতটা ভাল কাজ করছে তা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃতপিক ফ্লো মিটার। মনে রাখতে হবে, হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে ইনহেলার সঙ্গে রাখাটা মাস্ট। এতে কোনও ক্ষতি তো হয়ই না। উপরন্তু অনেকটা রেহাই মেলে।

আপনি যদি মনে করেন আপনার হাঁপানি আছে, আপনার যদি ঘন ঘন কাশি বা শ্বাসকষ্ট হয় যা কয়েক দিনের বেশি স্থায়ী হয় তাহলে ডাক্তার দেখান। কারণ, প্রাথমিক স্তরে হাঁপানির চিকিৎসা হলে দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে পারে ।

হাঁপানি নির্ণয়ের পরে আপনার হাঁপানি নিরীক্ষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডাক্তারের কথা শুনে চলুন। এতে প্রাণঘাতী হাঁপানির থেকে রেহাই পেতে পারেন।

(Feed Source: abplive.com)