যোগাযোগ
সুজিত বসু
আলোছায়ার খেলা তোমার মুখে
যতই কেন থাকি আলোর খুঁজে
মুখ ঢাকলো ছায়াই অসংকোচে
ভাগ্য হাসে বিদ্রুপ কৌতুকে
ওষ্ঠাধরে অনেক মধু জমা
দাওনি পেতে কখনো তার স্বাদ
একটা ছোট বিচ্যুতিকে ক্ষমা
করলে জীবন হতো না বরবাদ
চাঁপার সুবাস ছিল তোমার দেহে
দূরে থেকেই উপভোগের স্নান
চেয়েছিলাম, লুকোলে সন্দেহে
সহ্য করি তীব্র অপমান
অস্নাত সেই অবস্থাতেই বাঁচি
জল পারে না মেটাতে তৃষ্ণাকে
সুখের সঙ্গে রোজই কানামাছি
মন ক্রমশ পাথর হতে থাকে
হারিয়ে গেছে যা ছিল সব প্রিয়
নিষ্প্রাণ ধনরত্ন নিয়ে থাকি
রূপান্তরে বাড়ি জতুগৃহ
পবিত্রতা কখন দিল ফাঁকি
স্বপ্ন ছিল ঘর হবে মন্দির
পবিত্রতার রক্ষাকবচ পরে
বিপদ ঝড়ের সামনে হবো স্থির
আসুক দুঃখ বৃষ্টি হয়ে জোরে
অশুচি মন, দিন কাটে সংকটে
মিথ্যে জীবন যশ খ্যাতি আর ভোগ
ঘর মন্দির হবেই যদি ঘটে
তোমার সঙ্গে আবার যোগাযোগ ।
গোরকি পার্কে যুবক যুবতী
সুজিত বসু
একটু একটু করে সূর্য নেমে আসে গোরকি পার্কে মস্কো নদী ঘেঁষে
রক্তআভা গোধূলির মুহূর্তে প্রকাশ করে পড়ন্ত বিকেলে
পার্ক কুলতুরি থেকে এক পশলা হিম হাওয়া লুকোচুরি খেলে
সোনালি ঝরায় রেণু, নম্রমুখ সাশা কারো অমোঘ নির্দেশে
কোমরে দিয়েছে বেড় নাতাশার, বড়ো বড়ো লম্বা চুলে তার
অর্থময় জটাজুট, গলায় জমেছে হিম, নিশুতি নিঃঝুমে
সে আরো রক্তিম হবে, মশালের ধোঁয়া ধোঁয়া জ্যোৎস্নাময় আলো
সমস্তটি গোরকি পার্ক ব্যপ্ত করে ছেয়ে আছে, চুলে নাতাশার
গম্ভীর বেজেছে শব্দ, ঝিরঝিরে বৃষ্টিতেও অথচ ধারালো
অস্ত্রের শাণিত ফলা তেমন উজ্জ্বল জ্বলে, যেরকম ঘুমে
স্বপ্নের আশঙ্কাটুকু, ছমছম মন্ত্রোচ্চার, সব লাভ ক্ষতি
ফোয়ারায় ধুয়ে ফেলা, সিঁদূর চর্চিত তার শূন্যতা বিবরে
আমূল শরীরছায়া, আরতির মন্ত্রে ধীর তারা যে কি করে
শুয়ে থাকে শিলাতলে তান্ত্রিক যুবক আর ভৈরবী যুবতী।