জন্ম মৃত্যু – ব্রতীন বসু

জন্ম মৃত্যু   (অনুগল্প)

ব্রতীন বসু

সেদিন কেঁচো ভূত মন খারাপ করে বসে ছিল আফিংপুরের মাঠে।
তাই দেখে হাতিম ভূত বলে উঠল,
কিরে বাংলার পাঁচের মত মুখ করে বসে আছিস কেন?
ও বলতে ভুলেছি হাতিম মহিলা, কিন্তু পেত্নি বললে রেগে যায়। পেত্নি নাকি দেখতে খারাপ হয়। তাই হাতিম মহিলা ভূত, লেডি অ্যাক্টর যেমন, একট্রেস নয়।
তা কেঁচো ভূতের দাবি ওর আজ জন্মদিন।
ওর মা বাবা ওর মৃত্যুদিন পালন করছে, কাঁদছে মালা পরাচ্ছে, কিন্তু ভূত হয়ে তো ওর আজই জন্ম, তো জন্মদিন কেন হবে না?

দশ বছর বয়সে গত বছর কাঞ্চন নার্সিং হোমে আগুন ধরায় ও মারা যায়। দারুণ ছটফটে ছেলে, গানের গলাও ভাল, ভূতেরা ওকে পেয়ে খুব খুশি। তো সেই ছেলের মন খারাপ দেখে লেডি হাতিম জনে জনে রটিয়ে দিল ভূতেদের জন্মদিন পালন করতে হবে।

টেকসই কেক কোম্পানির মালিক কে ভয় দেখিয়ে কেক নিয়ে আনা হল।
মেনু অর্ডার করা হল ড্রেনল্যান্ড জাপান থেকে।
হই হই রই রই করে জন্মদিন হল।

কাঞ্চনের মা কাঁদতে কাঁদতে মারা গিয়ে কেক কাটার আগে এসে ছেলেকে দেখতে পেয়ে হাসতে হাসতে একসাথে কেক কাটল।

দূরে সব অতিথির মাঝে বিবেক ভয়ে ভয়ে দেখতে লাগল।
সে কবে থেকে জন্মমৃত্যুর মাঝখানের সেতুতে দাড়িয়ে আছে। আজকাল আবার সেতু সহজেই ভেঙে যায়। কোনদিকে যাবে, যেতে পারে সে ভাবতে লাগল।